রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অনৈতিক কার্যক্রমে স্বাক্ষর করতে অপারগতা প্রকাশ

হুমকি,ধামকি,কারনদর্শনার নোটিশ ও জবাব দেয়ার মধ্যে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জাহিদুর রহিম

প্রকাশিত: ৯:০২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার : মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীতে অনৈতিক ভাবে এক শিক্ষার্থীর সনদে তার নাম,তার বাবা-মায়ের নাম ও জন্ম তারিখ সংশোধনে স্বাক্ষর করতে অপারগতা প্রকাশ করায় কাল হয়ে দাড়িয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিমের। জাহিদুর রহিমকে হাত-পা বেঁধে পদ্মা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া , ডিবি পুলিশ দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে তাকে মারধোর করে মামলা দেয়া, শিক্ষা বোর্ড থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করাসহ ড.গোলাম মাওলার দেয়া বিভিন্ন হুমকি ধামকির সম্মুখিন হতে হয়েছে। ৬/১২/২০২৩ ইং তারিখ থেকে কমপক্ষে ১৫টিরও বেশি কারনদর্শনার নোটিশের জবাব দিতে হয়েছে তাকে।

জানা যায়, কয়েক মাস আগে পাবনার বাসিন্দা এক মেয়ে সনদে তার ও তার বাবা-মায়ের নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের জন্য আবেদন করেন। এরপর শিক্ষা বোর্ডের ২৭৮তম সভায় আবেদনটি অনুমোদন দেওয়ার জন্য বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিমকে বাকি প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য বলা হলে উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিম মেয়েটির ভর্তি বহি, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী ও ২০০৬ সালের নীতিমালার ৪.১৮ অনুযায়ী তার নাম সংশোধন করা যাবেনা বলে মর্মে সভায় জানালে পরবর্তিতে শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইনস স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো: গোলাম মওলা অনৈতিক ভাবে জন্মতারিখ সংশোধন করে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছিলেন। তার এমন অনৈতিক প্রস্তাব না মেনে নাম সংশোধন করা যাবেনা মর্মে নাম সংসোধনের আবেদনটিতে স্বাক্ষর করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। এর পর থেকে জাহিদুর রহিমকে হাত-পা বেঁধে পদ্মা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া , ডিবি পুলিশ দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে তাকে মারধোর করে মামলা দেয়া, শিক্ষা বোর্ড থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করাসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে থাকেন অধ্যক্ষ ড. মো: গোলাম মওলা যার অডিও রেকর্ড বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হয়েছে।

অডিওতে ড.গোলাম মাওলাকে বলতে শোনা গেছে যে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ও সচিব তাকে জাহিদুর রহিমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য বার বার বলছেন তাহলে জাহিদুর রহিমকে তারা চাকরিচ্যুত করবে। ঠিক তাদের কথা মত ড.গোলাম মাওলা গত ২ফেব্রুয়ারী জাহিদুর রহিমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ ছাড়াও সেই সেবাগৃহীতা নারীর শ্লীলতাহানি করাসহ অনৈতিক প্রস্তাব এবং ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে জাহিদুর রহিমের নামে মিথ্যা লিখিত অভিযোগ লিখিয়ে নিয়ে ৬/১২/২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৫টিরও বেশি মিথ্যা অভিযোগের ওপরে ভিত্তি করে কারনদর্শনার নোটিশের জবাবও দিতে হয়েছে তাকে। শেষ পর্যন্ত ২০০৬ সালের নীতিমালার ৪.১৮ অনুযায়ী বিধি বর্হিরভুত ভাবে সেই মেয়েটির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধন করা হয়েছে যা ইতিপূর্বে এমন অনিয়ম রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে কখনোই হয়নি বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে জাহিদুর রহিমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে মাননীয় চেয়ারম্যান মহোদরের নিকট থেকে ৬/১২/২০২৩ থেকে কমপক্ষে পনের বার আমাকে কারন দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছে, এতে করে আমি শারীরিক ও মানুষিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পরেছি। ২০০৬ সালের নীতিমালার ৪.১৮ অনুযায়ী বিধি বর্হিরভুত ভাবে নাম ও জন্মতারিখ সংশোধন করা হয়েছে। আমি একটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় ও শিক্ষা বোর্ডের সুনাম অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টা করেছিলাম। বিগত প্রায় ৩১ বছর আমি নিষ্ঠা ও সসতার সাথে চাকুরী করে আসছি। আমি অফিসের স্বার্থান্বেষী মহলের এভাবে প্রতিহিংসার শিকর হবো ভাবতে পারিনি। ড. গোলাম মাওলা তার স্বাক্ষাতকারে স্বীকার করছেন যে চেয়ারম্যান মহোদর ও সচিব মহোদয় তার কাছে লিখিত অভিযোগ চেয়েছেন। ড. গোলাম মাওলার অভিযোগ করায় এটা প্রমান হয়েছে যে আমাকে সুপরিকল্পিত ভাবে মিথ্যা অভিযোগে জড়িয়ে চাকুরী কর্তৃপক্ষ চুত্যি করবেন। আমি তাদের থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করছিনা।

জানতে চাইলে ড. গোলাম মওলা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বক্তব্য জানতে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো: অলীউল আলমকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বোর্ড সচিবের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।