আমরা দেখছি নতুন এক বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ৫:১৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২১

নিজস্ব প্রতিনিধি:
মুক্তিযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ১৯৭২ সালে বলেছিলেন, বাংলাদেশ ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হতে যাচ্ছে। আর ২০২১ সালে জাতিসংঘ ঘোষণা দিল, বাংলাদেশ ‘উন্নয়নশীল’ দেশ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। এর চেয়ে সুখের সংবাদ কী হতে পারে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাইলফলকে পৌঁছানোর বছরে! এই একটি খবরেই যেন বাঙালির শত বেদনা উবে গেছে। অর্জনের ইতিহাসে নয়া এই সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার আত্মমর্যাদাই তুলে ধরেছে বিশ্ব পরিসরে।

মাত্র ৫০ বছর। তাতেই ভুল প্রমাণিত হয়েছে হেনরি কিসিঞ্জারের ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র তকমা। ভিখারির অভিশাপ থেকেও মুক্ত বাংলাদেশ। ‘অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’য় নতুন এক বাংলাদেশের পরিচয় মিলছে এখন।জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে বাংলাদেশের সৃষ্টি, তারই কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে সে বাংলাদেশের আজ নতুন পরিচয়। উন্নয়ন প্রশ্নে বাংলাদেশ এখন নিজস্ব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারে। পদ্মাসেতু নির্মাণের প্রশ্নে বিশ্ব ব্যাংককে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অন্তত সেটাই প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ।

রক্তের সাগর পাড়ি দিয়ে যে দেশের জন্ম, সে দেশের মানুষকে দমায় কে! ঘাম ঝরানো শ্রমে এখানকার মানুষ রোজ স্বপ্ন বুনছে এগিয়ে যাওয়ার।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, ১৯৭৩-১৯৭৪ অর্থবছরে এ দেশের রফতানি আয় ছিল ২৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর এখন (২০২০ সাল) রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৯৭৩-১৯৭৪ সালে জিডিপির আকার ছিল ৭ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ২৭ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা জিডিপির আকার হয়েছে। ওই সময় মাথাপিছু আয় ছিল ১২৯ ডলার। এখন মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৬৪ ডলার। ১৯৭৩-১৯৭৪ অর্থবছরে দারিদ্র্যের হার ছিল ৭০ শতাংশ। সেই হার কমে এখন দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে।

জাতিসংঘের দেয়া তিন শর্ত মেনে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকাভুক্ত হয় ১৯৭৫ সালে। ২০১৮ সালেই ওই তিন শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ এ বছর সেই স্বীকৃতি দিয়ে জানায়, তিনটি শর্ত পূরণে প্রয়োজনীয়তা দক্ষতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের শর্ত পূরণে ন্যূনতম মাথাপিছু আয় এক হাজার ২৩০ ডলার দরকার হয়। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন দুই হাজার ৬৪ ডলার। অর্থনৈতিক ঝুঁকি নির্ধারণ করা আছে ১০০ স্কোরের মধ্যে ৩২ এর নিচে স্কোর হতে হবে। বাংলাদেশের স্কোর ২৫.২। আর মানবসম্পদ উন্নয়ন যোগ্যতায় বাংলাদেশের স্কোর ৭৩.২ এর কোটায়। যেখানে নির্ধারণ করা আছে ৬৬।