গরুর মাংস বিক্রিতে প্রতারণা

প্রকাশিত: ৫:২৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০২৩

গত ৭-৮ মাস ধরে কেজিপ্রতি ৮০০ টাকায় বিক্রি হওয়া গরুর মাংস সম্প্রতি ৫৫০-৬০০ টাকায় নেমে আসায় স্বভাবতই খুশি হয়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি। যারা খাবারের তালিকা থেকে গরুর মাংস কাটছাঁট করেছিলেন, তারা আবারও হয়েছেন দোকানমুখী। তবে হঠাৎ গরুর মাংসের দাম কেন কমে গেল, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে।

আবার দাম কমে যাওয়ায় কোনো মাংস ব্যবসায়ী এর সুযোগ নিচ্ছেন কিনা, সে প্রশ্নও উঠছে। সোমবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ-গরুর মাংসের দাম কমার পেছনের একটি কারণ হলো মাংসের সঙ্গে গোপনে গরুর মাথা, কলিজা, চর্বি, পা ও হাড় মিশিয়ে বিক্রির প্রতারণা। পাশাপাশি কেজিপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা কমে বিক্রি করলেও দাম বৃদ্ধির কারণে যেসব দোকানে দুই থেকে তিনটি গরু জবাই হতো, এখন মূল্য কমিয়ে বিক্রি করায় ২০ থেকে ৩০টি গরু জবাই হচ্ছে। বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে মুনাফা বাড়লেও আরও বেশি লাভের আশায় প্রতারণা করছেন এসব বিক্রেতা।

জানা গেছে, চাহিদার চেয়ে জোগান বৃদ্ধি, গত কুরবানির বাজারের অবিক্রীত গরু, বিকল্প গোখাদ্য এবং প্রতিবেশী দেশ থেকে অবৈধভাবে দেশের বাজারে ঢুকে পড়া এবং হিমায়িত খাদ্যের আমদানির নামে মাংস আমদানি হওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। হিমায়িত খাদ্যের আড়ালে যে মাংস আমদানি করা হচ্ছে, তা অস্বাস্থ্যকর বলে দাবি করেছে কোনো কোনো সংস্থা। তাদের দাবি, এসব মাংস ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় হোটেলে বিক্রি হচ্ছে। যদি তা-ই হয়, তাহলে এসব অস্বাস্থ্যকর মাংসের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। বিষয়টির তদন্ত হওয়া দরকার।

দেশে এখন পর্যাপ্ত গরু উৎপাদন হচ্ছে। তা সত্ত্বেও প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় দেশে গরুর মাংসের দাম কেন বেশি, তা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে গরুর উৎপাদন খরচ ও মাংসের দাম কত হওয়া উচিত, তা অনুসন্ধানে সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা সাধুবাদযোগ্য।

সংস্থাটি পোলট্রি ফিড নিয়ে যেমন গবেষণা করছে, তেমনি গরুর মাংসের মূল্য কত হওয়া উচিত বা এর উৎপাদন খরচ কত, তা নিয়েও গবেষণা করা দরকার। গরুর মাংসের ন্যায্য দাম নিশ্চিতে খুচরা ও পাইকারি মাংস ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর দ্রুত করণীয় ঠিক করবে, এটাই প্রত্যাশা।