১০০ বছরেও বিদ্যালয়ে হয়নি নতুন ভবন

প্রকাশিত: ১:৫৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২৪

বগুড়া প্রতিনিধি :-

বগুড়ার ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের রুদ্রবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তৎকালীন সময়ে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব নামদার খান নামের একজন শিক্ষানুরাগী ১৯২১ সালে জমি দানের মধ্য দিয়ে ছনের ঘর তৈরী করে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। দীর্ঘ ৫০ বছর পর ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় স্বীকৃতি পায়। পরবর্তীতে টিন সেটের ছয়টি ক্লাসরুম নিয়ে পথচলা শুরু করে রুদ্রবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ হলেও ভাগ্য খোলেনি ওই প্রতিষ্ঠানের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ৩৪ শতাংশ জায়গার উপর বিদ্যালয়টি দাঁড়িয়ে আছে শোচনীয়ভাবে। প্রতিষ্ঠানের উপরের টিনের চাল ছিদ্র হয়েছে অনেক আগেই। সামান্য বৃষ্টিতে ক্লাসরুমে পানি পড়ে। ঘুনে ধরেছে ঘরের তীরে। যেকোনো সময় চাল বা তীর ভেঙে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ২০০৫-৬ ইং অর্থ বছরে তৎকালীন বিএনপির শাসনামলে ছাদ বিশিষ্ট একটি আনুভূমিক সম্প্রসারণ ভবন নির্মিত হয়।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ধুনটের বাস্তবায়নে নির্মিত ব্যয় হয়েছিল ১২ লাখ ৪৬ হাজার ৭৭৫ টাকা। প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে সাতজন শিক্ষক রয়েছে। প্রধান শিক্ষকসহ ছয়জন মহিলা ও একজন পুরুষ। বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ২১ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ১৪ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১৪ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২২ জন, প্রথম শ্রেণিতে ৩২ জন ও শিশু শ্রেণিতে ৪০ জনসহ মোট ১৪৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থীদের বসার ব্রেঞ্চগুলোও খুব জরাজীর্ণ। দু’টি আধাপাকা শৌচাগার যা শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই ব্যবহার করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নাজমা সুলতানা জানান, ‘শতবর্ষ তথা ১০৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হওয়া রুদ্রবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘরগুলো অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষার সময় শিক্ষার্থীদের পড়াতে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। টিনের চাল বিশিষ্ট ঘরগুলো যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। বিশেষ করে ঝড়ের মধ্যে বিদ্যালয় নিয়ে অনেকটাই চিন্তিত থাকি।’

প্রতিষ্ঠানের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লা মেজবাহ বাবু বলেন, ‘১০৩ বছরের পুরনো একটি প্রতিষ্ঠান। অনেকভাবে চেষ্টা করার পরেও একটা নতুন ভবন পেলাম না। ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ঘরেই চলছে পাঠদান। সরকার যদি নতুন ভবন নির্মাণ করে দেয় তাহলে পাঠদান ও শিক্ষার্থী সবই নিরাপদ হবে।’

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বজলুর রহমান জানান, ‘প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য অনেকদিন থেকেই চেষ্টা করা হচ্ছে। গত বছর ডিও লেটারে ৮ নম্বর সিরিয়ালে রুদ্রবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম রয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে আমি অবগত নই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান জানান, ‘এ সংক্রান্ত উপজেলা শিক্ষা অফিস কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কি-না জানি না। তবে বিষয়টি আমি অবগত নই।’